আবার আপনাদের সামনে ‘বাক’ । তার ৭৪তম পোস্টকে শারদ প্রকাশ হিসেবে গ্রহণ
করতে পারেন । তবে আলাদা করে কোনো উৎসবের মেজাজ আমরা দেখাচ্ছি না । ঠিক সেইভাবেই
আগামী ৭৫তম পোস্টেও কোনো বাড়তি কিছু আমরা পেশ করবো না । ৭৫ নিছক একটা সংখ্যা
হিসেবেই আসবে ।
এবারের কবিতা বিভাগ আশা করা যায় আপনাদের মন জয় করবে । বাংলা কবিতার
বিভিন্নতার সুর সেখানে বেজেছে যথারীতি ।
এই মাসের কবি হিসেবে দেখা দিচ্ছেন প্রদীপ চক্রবর্তী । ৯০ দশকের এই কবির
কবিতা ‘বাক’-এ খুব বেশি প্রকাশিত হয়নি । এবারে একসঙ্গে অনেকগুলো লেখা আপনাদের জন্য
বেছে নিলেন বিভাগীয় সম্পাদক নীলাব্জ চক্রবর্তী ।
কবিতা বিষয়ক গদ্যে সমসাময়িক অনলাইন কবিতা চর্চা নিয়ে আলোকপাত করলেন অভীক
দত্ত । উনি ‘আদরের নৌকা’ নামক একটি সুন্দর ওয়েবম্যাগ সম্পাদনা করেন । এ নিয়ে বলার
জন্য তাঁকে বেছে নিয়েছিলাম আমরা ।
‘গল্পনা’ বিভাগে সুন্দর একটি টেক্সট লিখেছেন চান্দ্রেয়ী দে । আমি
ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের সেটা পড়তে অনুরোধ করবো । বিভাগটির মর্য্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছে
এই লেখা । এমন লেখাই আমরা চাই । খুব বেশি পাই না ।
সাক্ষাৎকার বিভাগে মৃগাঙ্কশেখরের সঙ্গে ধারাবাহিক
কথা শুরু হল নতুন কবিতার কবি স্বপন রায়ের । এই কথাগুলো এর আগে বলা হয়েছে কিনা ,
দেখুন , আমরা শুনিনি ।
‘পাঠম্যানিয়ার পেরিস্কোপ’-এ এবার উমাপদ করের কলমে শূন্য দশকের ৩টি জরুরি
কাব্যগ্রন্থের আলোচনা রাখা হল ।
ধারাবাহিকভাবে
পরিশ্রমী কাজ করে চলেছেন রমিত দে 'বাক'-এর জন্য । ওঁর 'হারানো কবিতার জানালা' আজ আমাদের গর্বের জায়গা
। 'বাক ৭৪'-এ রমিত তুলে আনছেন কবি শ্যামল সিংহকে ।
কবি শ্যামল সিংহ ... তাঁকে না জানলে বাংলা কবিতার খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ অজানা
থেকে যায় । তাঁর লেখা অসামান্য কবিতাগুলো হয়তো
আমরা অনেকেই পড়িনি , কিন্তু বাংলা কবিতা
নিয়ে গলা ফাটাই । এই কবিতাগুলো আমাদের পড়ে নেওয়া
জরুরি । শ্যামল সিংহকে আমাদের পড়ে নেওয়া খুব জরুরি । 'বাক ৭৪' সেই সুযোগ করে দিচ্ছে ।
বাকের অনুবাদ
বিভাগে দারুন খবর । 'অন্য
ভাষার কবিতা’ বিভাগে অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
এবারে রাখছেন ইরানের new poetry movement এর একজন কবির কবিতা । এই movement আমাদের
এখানকার নতুন কবিতা ভাবনার সমসাময়িক । দেখা যাক নতুন কবিতার ভিতর এবং বাইরের
মানুষদের এই কবির লেখা কেমন লাগে ।
'বাক ৭৪'-এ তাঁর 'কবিতা ভাষান' বিভাগে
বারীন এবার তুলে আনছেন আমেরিকান কবি জন বেরিম্যানের কিছু স্বপ্নিল কবিতা । কে এই জন বেরিম্যান ? আমেরিকায় ৫০/৬০ দশকে শুরু হয় কনফেশনাল পোয়েট্রি আন্দোলন ( স্বীকারোক্তি
কবিতা)। বেরিম্যান ছিলেন তার অন্যতম পুরোধা। অন্য সঙ্গীরা ছিলেন রবার্ট
লোয়েল, সিলভিয়া প্ল্যাথ, অ্যানি সেক্সটন, অ্যালেন গিন্সবার্গ, ডব্লিউ- ডি- স্নডগ্রাস, ইত্যাদিরা। আমাদের সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ৬০ দশকে কিছুকাল আমেরিকায় থেকে ফিরে এসে বাংলায় ‘স্বীকারোক্তি কবিতা’ প্রথম লেখেন – “আমি কীরকমভাবে বেঁচে আছি”।
এছাড়া দুটি ধারাবাহিক উপন্যাস । এবং চিত্রকলার জন্য
‘দৃশ্যত বিভাগ’ ।
‘বাক’-এর পক্ষ থেকে সকলকে শারদ শুভেচ্ছা জানাই । বৃষ্টি
যেন কাশফুলগুলোকে আর ময়লা না করে ।
(অনুপম
মুখোপাধ্যায়)
সুমাত্রা
রহমানের কবিতা
মেয়েলোকের লেখা কবিতা
রুলটানালাইনেরভাঁজে
১টিস্ত্রীচড়ুই
লাইনেরওইপারেবেচারিপুরুষ
টরেটক্কাবাজবেনা ?
টেলিগ্রামপৌছলকিকরে !
উঠোনেরদড়িতেটাঙ্গানো
১টি৩২সাইজেরব্রা
এবংপ্রমাণসাইজেরপুরুষালি
আন্ডারওয়্যার
টুপটাপনিংড়েনিচ্ছে…
২০.০৯.২০১৩
টেনিস
টেনিস খেলার কোর্ট
নেটের এপার ওপার
২জন
১টিই বল। লাফাচ্ছে...
লাফাচ্ছে আরও ২জোড়া টেনিস ও
১জোড়া ফুটবল
২০.০৯.২০১৩
সমীর রায়চৌধুরীর কবিতা
রোমান্টিক
রাস্তাঘাটে
পিটহোল
রেলিঙের বাহারি
রঙ হচ্ছে
গর্তে নামছি
পাতালপুরী
আগ্নেয়গিরি বারমুডা ত্রিভূজে
মুখে মধু নিয়ে
ফিরে এসে দেখছি
ধোঁয়ায় চাক
ভেঙে
নিশ্চিহ্ন
বসিয়ে রেখেছে
চুম্বক
ছাপোষা মানুষ
চলন্ত বাস থেকে
কলকাত্তাবালী
কালী মাঈকে
প্রণাম করছে
চলন্ত সরছে
ধ্যানবিন্দুর চুম্বকে
অস্বস্তি
সদ্যযুবতী
মেয়েটা
নাকুরনুকুর
করতে করতে
আদুর হয়ে
স্বস্তিতে
ঘুম ভেঙে দেখছি
বাথরুমে
ধুয়ে ফেলছে
ফুলশয্যা
হলুদ
কারগাযি না তার
কাজিন
সার্চ চলছে
বর্ণমালায় কণায়
খোলা স্তন কার
পাগলি না
হিরোইন
মা না জগজ্জননী
হলুদ দুধের
গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে শব্দে
প্রেম
সাবধানে আছি
কেউ জানে না
কোলগেটের উধাও
ফাইল
আমার সিন্দুকে
একদিন দাম
বাড়বে
দোলনচাঁপা
চক্রবর্তীর কবিতা
দৃষ্টিবিভ্রম – ৫৮
দ্যাখোনি জীবন পুড়ছে
আগে
দ্যাখোনি – দুধের বাটিতে, মাংসের কড়াইয়ে
পোড়া মশলার গন্ধ মেখে তেলকালি হয়ে যাচ্ছে আঙুল ?
এ আঙুল তোমার পছন্দের নয়
এ নখের
পালিশ তোমার মনমতো নয় – বোঝনি আগে
তুমি আমার মধ্যে বিষণ্ণতা দ্যাখো
আমি দেখি,
মিশ্রিত জীবনপ্রবাহ
আমাকে
সরিয়ে দিয়েছে
ভালবাসার শ্রান্তি থেকে দূরে
দৃষ্টিবিভ্রম – ৫৯
এত কথা জমে গেছে জান,
নির্জনতাকেও
আজকাল ভিখারি মনে হয়
অনুস্বারহীন, অতীত ভবিষ্যতহীন
তুমুল বৃষ্টিতে প্ল্যাটফর্ম খুলে দিচ্ছে রেলরোড
সমস্ত
শরীর ভেজাবে
তাকে দিয়ে
দেবে সবটুকু আগ্রহ, উল্লাসবোধ
একবিন্দু অপেক্ষা নেই যার
কাছাকাছি হাঁটবার
স্থবিরতা নেই
দৃষ্টিবিভ্রম – ৬০
বরষার আদলে ঝরে পড়ায়
ঘুণ ধরে
গেছে
ঘুণ ভাবলেই মনে আসে কলকাতার কাঠ –
পুরনো আনন্দমেলা, বুকশেলফ – টেবিলের ধুলো
ও আরও যা যা কিছু ফেরত দাওনি
কথা ভাঙলে শব্দ হয়
ফুলেফেঁপে
ওঠে চিঠি লেখার স্মৃতি
দৃষ্টিবিভ্রম – ৬১
অন্ধকারে জলের শব্দ লাগে
ফুলেফেঁপে
ওঠে অন্ধজল
আঁধারের অন্য কানে আলো
আঁধারের
অন্য আঙুল
শ্যামবর্ণ দীর্ঘজানলা – ওহ!
হরিণীর মৃৎপাত্র, হরিণীর কস্তুরি
হরিণীর মাংসাধার
রক্তশূন্য হাড়
অষ্টমীর
রাধা আলোকবৃত্ত
রাধা
হৃতঘ্রাণ
প্রিয়নাভি থেকে স্টেশন অবধি
পুরোনো
চিলেকোঠা অবধি
মরণ অবধি
রঞ্জন
মৈত্রর কবিতাঃ রুট ম্যাপ
রুণ
মৃদু ধুন সামিট ছুঁয়েছে
জানলা বড় হয়ে যায়
সেন্ট মেরী আর তার
বউল মউল অরগান
আমার গাছ বড় হয়ে যায়
নূপুরে বিষ্ণুপুরে সকাল হোলো কি
পড়ছে কিনা ড্রিপ থেকে
সানড্রপে আনাজের নিজস্ব নিক্কন
লবে পল্লবে ভেসে যায়
ফেলে আসা চিঠি ডিজিটাল
রুণ কোলে বৃষ্টি আসছে
আমার নার্সিং হোম বড় হয়ে যায়
রুয়াম
এই নামে বন আছে
আঙ্গুলের ডগায় গড়ে ওঠা
মন জরিত চিক্কণ
আরোহণ কার যেন
ক্যাম্প-১ কার যেন পায়ের পলাশ
রেতিয়া ভাষাটি এলো সানুতে বিজল
খুব ঘেঁষা খুব সমুদ্দুর
বৃষ্টির ফোন আসে
তারকাটা চরাচরে নিভাষিক রিডায়াল
কলার টিউন আসে
জেগে ওঠা সবুজ রেখাটি
কারা গাছ কারা যেন সীজন টিকিট
রুবাই
হাতনাড়া আবার দেখি
চোখ ঘষি
ঘনিষ্ঠ মলাট আজ মহকুমা টাউন
ফুটে ওঠা রুখসত
তার যে আঙ্গুল নড়ে
কাঠের চৌখুপিতে জ্যান্ত থাকে কোমল
রেখাব
আঁকো তুমি একটু যেন কোল ঘেঁষা
একটু কি পুলার সরণী
ছাঁদ চাঁদ গ্রীল ছেড়ে বেরিয়েছে মোবাইক
তিন নম্বর লেন
তিন নম্বর পৃষ্ঠা
চোখ ঘষি আর চোখ আমাকেও ঘষে
হাতছাড়া করে দেয় পাড়ায় প্যারায়
রূপ
যশোর রোডের গাড্ডা
তায় পড়ি
পতন বতন তন
জ্ঞানীর ঢাবায় সবই গাজর ক্ষীরিকা
অফ বিট
খানা রইল অধরা মুলুক
খানা রইল অধরা মুলুক
ককটেল চন্দ্রকোষে
যত পথ মেঘ করে
আকাশ গলিয়ে করে চিহ্ন যতি করডিয়াল লাইম
একটু ছিলে পাশ থেকে
টপনটে তূলিশীর্ষে লিঙ্গুইস্টিক
হর্ন দিয়ে ফেলে বাস
গাড্ডাও দেয়
আলো একটু বড় হোল
অপার হ্যাচারি ঢাকা নওল কুসুম
কাচ্চা বাচ্চা ফোঁটাগুলো বৃষ্টিকে
মা কোরে দেয়
রুমনি
মেঝে নেই
পা-কে বোলে দেখি
মরু নেই
বালিকে
ও' বালিকে তোমাকেও ক্রিয়া কিছু
টাটা স্কাইপথে
মল থেকে সামান্য ঝুমঝুম থেকে
আকাশের রুকমিনি
তার পা এসেছে
বোলে দেখি
মাথাই তো
হাওয়ায় হিমেল , চুলে,
বেস ক্যাম্পের দিকে অটো স্ট্যান্ডের
দিকে
নেমে গেছে বাকি নুরজাহান
আলো শুয়েছিলাম , আলো ,
মনে করো , বোল্ডারে , তরাইয়ে
হেনরির অকাট্য ম্যানগ্রোভে
চাওয়ার তো চোখ নেই
ঘন অন্ধকার খুলে কচি গলা
অমল আউটিং
অনীক রুদ্রর কবিতা
রোজি
১
কাঁচা টমেটো রঙের
অন্তর্বাস পরেছে
রোজি
তার স্ট্র্যাপ
অন্য লোক যখন দেখে
আমি ছাড়া
বুক , টনটন করে ,
বাক্য-হারা
অথবা আমাকে নিয়ে
ঠাট্টা করে , রোজি
অথবা আমাকে যখন
অবসোলিট আর
মিসফিট আর
শারীরবৃত্তীয় কুত্তা বলে
কিন্তু আমি
ম্যারাথন সঙ্গম না করলে
রোজিও মিথ্যে হয়ে
যায়
রোজি হল সেই
বন্দর নায়িকা
নানাবিধ ফ্রেমে
বন্দী , আর্টেমিস , অপ্সরা
বনলতা সেন
যার সঙ্গে
গোলাপের কোনো সম্পর্ক নেই
রোজি
২
ভয়ঙ্কর সব
নেতিবাচক সম্ভোগ থেকে
উঠে আসে রোজি
দু-হাত মাথায়
তুলে কেশদামে একটা
ফাঁস লাগিয়ে
রঙিন , নরম একটা
গোলাপি টুথব্রাশ নিয়ে
বেসিনের দিকে এগিয়ে যায়
অর্ধেক পোড়া
সিগারেট তখনো ছাইদানের মাথায়
বিছানার থেকে
দূরে পাপোষের পাশে
পড়ে আছে রোজির
ফুলতোলা প্যান্টি
তারপর ও ধাঁ করে
রিমোট হাতে
কতগুলো সুইচ অন-অফ করতে থাকে
ঠিকমতো এক কাপ
চা-ও বানাতে জানে না রোজি
অথচ ভাঙা দু-একটা
রবীন্দ্রকলি গুনগুন করতে করতে
পাক্কা সাড়ে ছটায়
জিমে চলে যায় রোজই
ব্যত্যয় ঘটে না
ফিরে এসে আধঘন্টা
ধরে নানারকম ঝামেলা , পাকায়
অথচ রোজির
অশীতিপর ঠাম্মা তাকে ‘দিদি’ সম্বোধন করতেন
রোজি
৩
আলতামিরার
গুহাচিত্রের প্রাগোইতিহাসিক এক
ষন্ড-দর্শন যুবকের সঙ্গে রোজির বিয়ে হল ,
একদিন
আমি ছাড়া প্রায়
প্রত্যেক বন্ধুদেরই নেমন্তন্ন
(কারণ আমি আলাদা)
যে বরাবর আর
প্রতিদিন কোনো না কোনো অনুষঙ্গে
ভাবতাম রোজির কথা
তার পারিবারিক
প্রচুর জমানো বিষয়সম্পত্তি আর
আমার রুজিরোজগার
, দিনে দিনে
ক্লিশে আর ঘ্যানঘেনে
হয়ে যাচ্ছিল আমাদের সম্পর্ক
সংবাদপত্র আর
বৈদ্যুতিন মাধ্যমেও তখন রোজি আর
আমার কিসসা
প্রায়ই শিরোনাম হচ্ছিল
ইতোমধ্যে সে রপ্ত
করে নেয় যাবতীয় মার্কিনি আর বামপন্থী
সন্ধ্যাশব্দ
শরীরী ভঙ্গীতেও
ফুটে উঠছিল রুক্ষতা
এবং ওইসব খুব
সন্তর্পনে ঢাকার চেষ্টা করছিল রোজি
তখনও তাকে বাদামি
এক ছেনাল মাগীই মনে হত
সুতরাং এবং অতএব
, প্রয়োজন ছিল একটিবার তাকে
খোঁটায় বেঁধে ফেলা
অবশ্য বেশ
ধূম-ধামাকার মাঝে তার ভঙ্গুর দাম্পত্যকে
কার্যকর করে তোলা
হয়েছিল
রোজি
৪
রোজির মধ্যে
সর্প-পাতাল-ক্ষুরধারা-বাড়বানল
বিষ ও অগ্নি , সবকিছুই আছে
রোজিকে ভালোবাসে
অনেকেই অর্থে
তার প্রতি সামান্য হলেও দুর্বলতা
প্রকাশ করেছে
সম্ভ্রান্ত সমাজকর্মী আর ‘এক ঘর’ বলে সম্মাননাও
জানিয়েছে তাকে
নরম আলোয় তার
পাতলা , কালচে ঠোঁট যখন নীলাভ লাগে
শরীরী
উত্থানপতনগুলি অন্য কোনো অভ্যুদয়ের অপেক্ষা করে
আমিও তাকিয়ে থাকি
, বিমোহিত
সে আমাকে অফার
করে উষ্ণ বা শীতল পানীয়
স্থানুবৎ তার
চোখের দৃষ্টি আমাকে নিথর করে তোলে
অথবা আগেও যেভাবে তুলতো
এবং যে শব্দবন্ধ
উচ্চারিত না হলে
সমস্ত উপপাদ্য মিথ্যে হয়ে যাবে
তা হল ‘খানকি’ ,
কিন্তু তার আগে কি
‘পাঁড়’ শব্দটি ব্যবহার করা যায়
সহবৎ শেখার মহান
উদ্দেশেই আমি তখন রোজির কাছে
যাতায়াত করতাম প্রায়শ
আসতেন অনেক
প্রবীন চিত্রপরিচালক , প্রযোজক , ব্যবসায়ী
অভিনেতা আর পোড় খাওয়া সমাজসেবী
নেগেব-হাইফা-বসরা
হয়তো রোজিদের জন্য নিরাপদ নয়
কিন্তু কোলকাতা ,
মায়ানমার , মুম্বাই , বা কুয়ালালামপুরে
বা ঢাকা শহরে নিশ্চয় রোজির বিচরণ হল
একধারা সমাপতন
উড়ন্ত কার্পেটে
চড়ে বিংবা ব্যক্তিগত কপ্টারে ভেসে বেড়াচ্ছে
রোজি , মাটিহীন
শেকড়হীন এক ক্রন্দসী পথচারিনী
যার বেশি কিছু
জানার থাকলে আপনারা
‘রামতনু লাহিড়ী ও
তৎকালীন বঙ্গসমাজ’ গ্রন্থটি আরেকবার
পাঠ করতে পারেন
অনুপম
মুখোপাধ্যায়ের লেখা
ডিম
আগেই আমার ডিম
ভেঙে যাচ্ছে
ভিড়রাস্তায়
ছড়িয়ে পড়ছে
কুসুম
শক্ত পেটাই ডিম
তার বিচ্ছিরি
ফাটা খোলাটা
সাদা গাড়ির নীল
চাকার পাশে
একটা মোরগ
ময়লা ধুচ্ছে
যখন
আরেকটা মোরগের
জন্য তৈরি হচ্ছে
বেথলেহেম
লম্বা-চওড়া হোক
না হোক
রোদের জন্যেই
জায়গাটার
নাম হেমনগর
কল্পনা আর অরুণ
ঘসে ঘসে
ঝকঝকে করা
হচ্ছে আকাশ
জন্ম দিচ্ছে
> < জন্ম নিচ্ছে
গোয়াল থেকে
ভেসে আসছে
চাপা বুনো
কান্নার সুর
পাগলা গরমে
।
বিমর্ষতায়
।
পুলকে
।
আর খুব একটা
।
বিচ্ছিরি ঘামে
থেকে যাওয়ার
ইচ্ছেটা থেকে যেতে চাইছে
ভারতীয় জাপান ও একটি সন্ধে
হিরোশিমার জানলাগুলো চুরমার হচ্ছে
অথবা
আসন্ন সন্ধে তার ফড়িংগুলোকে
খুলে খুলে উড়িয়ে দিচ্ছে
এখানে
সিল্কের শাড়িগুলো কিমোনো হয়ে উঠছে
সিল্কের শাড়িগুলো সিল্ক স্টোরে আর বিক্রি হচ্ছে না
অতএব
শরৎকাল সুন্দর হচ্ছে
বর্ষাঋতুটিও চমৎকার থাকছে
ভারতীয় জাপান ও
জাপানি ভারতবর্ষে
বুড়ো লোকগুলোকে আদর করা হচ্ছে
সী-বিচে কমে যাচ্ছে বালিকণার ফাঁক
একটা বিরাট প্রাসাদে
মনের ইচ্ছেগুলো এতদিন থেকেছে মিলেমিশে
আর
চেনা ছায়াগুলোকে চেনা ছায়াগুলোই ...
যেকোনো অচেনা ছায়াকেই তো এই সন্ধেবেলায়
ফুজিয়ামার চেয়ে ঢের কাছের মনে হচ্ছে
পলাশ দে-র কবিতা
খুনী ফিরে আসছে –কমল চক্রবর্ত্তী
বন্ধু যায়,খুনী ফিরে আসে
চিরুনী কোনো কিছুই তল্লাশ পারেনা
একটা গাছের গন্ধে অন্য এক বীজ ,মর্মর
পাকা মহুয়া ফুলে ধাক্কা লাগল তোমার সিঁড়ি
জলের টুকরো গলায় এবং চশমায়
এই আড্ডায় লিঙ্গ যোনি মনেই থাকে না
তবু খুনী যায় বন্ধু আসে খুনী তবু বন্ধু
তোমাকে মানিয়ে এই যে নতুন দেশ
এই যে মানচিত্র তোমাকে ঠকিয়ে
অত ভেব না…শুধু তো এক
গন্ধভর্তি সাঁতার
রান্নাঘর
রান্না রান্না ডাকলে এত ঘর ফিরছে না
এত নিচে উঠে গেলে তুমি
আলাপে স্বর খুঁড়তে খুঁড়তে কী শুনছ
লিপি চেপটে যাচ্ছে মেশিনে
লিপি নয়তো পাথর অথবা রং হয়ত দূরবীন
এমন বউ বউ ডাকলে সজনেফুল
ফুটছে না
গাছ
পেরেকে ঝোলানো গাছ, কোমরে তারপোড়া গন্ধ
“লোকনাথ মুরগী সেন্টার” দুলছে হাত বেয়ে
ওই দিকে “সুপার আয়া সার্ভিস”... কাক, এঁটো, কাক
আপ যায় ডাউন আসে সোদপুর স্টেশন
ভর্তি ফাঁকা বেঞ্চ, অফিস টাইম, মাটি মাংস, পদ্মপাতা
সীজনে হাওয়া ভাঙে মুকুল, খোলে গাছের দোকান
সেই সব ঠেক সিরিয়াস না হয়েও তোমাকে বন্ধু ভাবে
আমি, পরাগ উগরে দিয়ে আসি . . . একায়
মা
পেট ভর্তি ঘর আমায় মা ডাকছে
সিঁড়ি গুণে ছাদ উঠল অন্য পাড়ায়
দুরকম বীজ কখন ঠোঁট ছোঁওয়ালো, আলতামিরা
আর রং ভাঙছে, খেলছে লাল একটা ষাঁড়
পাতা থেকে মোচন থেকে বউ থেকে ঘাম থেকে জিন্দাবাদ
প্রসবযন্ত্রণা সব সবটাই তো তোমার প্রভাব
মিউজিকাল চেয়ার
দু হাত ছড়ানো একা, এই কুড়োচ্ছি
ঘরের বাইরে অথচ বাড়ির ভেতরে শুধু, মাত্র বারান্দা
যতটা পাগল
মিউজিকাল চেয়ার খেলার সময়
একটাই ইশারা, তোমার
গান ভেবে, আমি তো, আমি
ঈশ্বরকণা হারালাম
কাজল
সেনের কবিতা
রূপকথা
কত নদী যে আকাশ হলো পিতামহের সন্ধানে
নিখুঁত ও গূঢ় শিল্পের আশায়
হাওয়ায় হাওয়ায় উজান বেয়ে এলো চতুর্দশী চাঁদ
কিছুটা সময় তার গাছের সব তালপাতা জুড়ে
অনেকটা সময় নাভির গর্ভদেশে বিষণ্নতায়
এ কোন্ প্রজাপতি বারবার ফিরে আসে একলা উঠোনে
সাম্রাজ্যের বালাই নেই কোনো
শিকড় বাকড়ে কেটে যায় রূপকন্যার দিন
মাটির প্রবল রসে ঘনীভূত হয় রাতের মৌসুমী মায়া
রূপের কথায় আসে রূপকথা
রূপ থেকে রূপান্তরের কথাও
রূপকথা নিয়ে এভাবেই কেটে যায় আটের প্রহর
রূপকথা মালাকার একদিন আমাকে বলেছিল নিভৃতে
জানো আমার রূপের কোনো মানে আমি পাইনি খুঁজে আজও
কোথায় সে থাকে কোন্ নির্জনতায়
রূপের কথায় তার ছিল অনেক রূপটান
রূপকথাও ছিল কিছু কিছু
রূপসাগরে ডুব দিয়ে কেউ কেউ রূপসী হয় সন্ধ্যাবেলায়
তারপর রাত ঘন হলে
রাতের প্রতিটি রোম ছুঁয়ে যায় নাগরদোলায়
লেখা হয় রূপকথা কত
পিতামহীর সুলুক সন্ধানে দীর্ঘ রাত ভারি হয় নূপুরতলায়
খাঁটি পরকীয়া
নতুন কথা বলতে বসে পুরনো কথাতেই কেটে যায় দিন
কেন বলা হলো না নতুন কোনো কথা কোনো নতুন দিনের কথা
জঙ্গলে ঘোরাই হলো শুধু শুধু
এখন আর জঙ্গলই বা তেমন কোথায়
একটাও দেখা হলো না বাঘ দেখা হলো না কোনো সুন্দরী ময়াল
নামের বদলে সর্বনামে ডাকা হলো না কোনো নাসপাতি নাম
এখন যদি ঘোর কুয়াশায় বলা হয় চোখ মেলে দেখ নদী পারাপার
বলা হয় ছেলেমানুষীর ঝোঁকে একবার ফুটে ওঠো ঠিকঠাক ফোটার
মতো
আমি তো বিব্রত আঙুলে তোমাকে কতবার ডেকেছি কতভাবে
হাত বাড়িয়ে খুঁজেছি তোমার শেখানো সেইসব নাগালের নিবিড়তর
পাঠ
কে কোথায় সন্ধ্যেবেলা পাশ ফিরে শুয়েছে বলো কোন্
সন্ধ্যেবেলা
সরল সুরে গান গেয়ে কেউ কি বলেছে কাচাধোয়া মেয়েদের কথা
জড়িয়ে গেছে সব মাঠ সব আদবকায়দা চাগিয়ে ওঠা সাদাবাড়ি
মোরামের রাস্তায় ঢালা হয়েছে কমলার রঙ
অনেকটা ভালো থাকার কমলার রঙ
আমি তো আসছি বলে এভাবেই বারবার ফিরে গেছি সুবর্ণরেখায়
সদালাপী মানুষের সাথে সেরেছি অনাবশ্যক সব সংলাপ
অথচ দেখ কোনো নতুন কথাই বলা হলো না সারাদিন
বনবাংলোয় কাটানো হলো না কোনো সর্বনাশী রাত
বরাবরের প্রসন্ন শীত এবারও এলো
তবুও কেন কে জানে জমলো না আমাদের খাঁটি পরকীয়া
গৌরব
চক্রবর্তীর কবিতা
পাগলের
জার্নাল (ধোঁয়া বিষয়ক)
ধরা যাক ধোঁয়া, এইমাত্র মিশে গেল জরায়ুর ভেতর
যেমন টার্বুলেন্স। যেমন নিউক্লিয় বোঝাপড়ার এক
অশ্লীল মিশ্রণ বিগত দিনগুলোতে কেউ আবিষ্কার
করেনি এতদিন
এরপর, যে-যার মত বিশ্বাসী হয়েছে জৈব ক্রিয়ায়
দূষণমুক্ত হওয়ার আশঙ্কায় যে-যার মত
আঙুলের ফাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে জ্বলন্ত সিগারেট
এবং তার সুখটানগুলো পরম বন্ধুদের কাউন্টার
বিনিময়ের দিকে মুখ চাওয়াচায়ি সেরে নিচ্ছে
যেমন টার্বুলেন্স। যেমন নিউক্লিয় বোঝাপড়ার এক
অশ্লীল মিশ্রণ বিগত দিনগুলোতে কেউ আবিষ্কার
করেনি এতদিন
এরপর, যে-যার মত বিশ্বাসী হয়েছে জৈব ক্রিয়ায়
দূষণমুক্ত হওয়ার আশঙ্কায় যে-যার মত
আঙুলের ফাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে জ্বলন্ত সিগারেট
এবং তার সুখটানগুলো পরম বন্ধুদের কাউন্টার
বিনিময়ের দিকে মুখ চাওয়াচায়ি সেরে নিচ্ছে
যেভাবে মিলিয়ে
যাচ্ছে ধোয়ার অস্তিত্ব একের পর এক
তার হাঁড়ির খবর আজ জেনে গেছি
জেনে গেছি তার পরমানুর ভেতর হতে থাকা আদান-প্রদান
তার হাঁড়ির খবর আজ জেনে গেছি
জেনে গেছি তার পরমানুর ভেতর হতে থাকা আদান-প্রদান
আর দূরে, কত
কত বইপত্তর ঘেটে তোমরা যা কিছু
আয়ত্ত করেছো, শিখেছো যে সব হাওয়া-- সেগুলো
সব ভুল হবে বলেই এতদিন আমি 'রা'-কাড়িনি
প্রবীণ গাছের মতো বয়স্ক হয়ে থেকেছি অন্ধকারে
পরিযায়ী পাখিদের বিশ্রামকালে ওরা যখন আমার
শীর্ণ শাখায় টাঙিয়ে রেখেছিলো হাজার প্রশ্নের ফর্দ--
সেগুলো কখনও শোনার চেষ্টাও করিনি এতকাল
শুধু সামান্য মোচড়ে ওদের বাসা থেকে ডিমগুলো
অহেতুক মাটিতে ফেলে দিয়েছিলাম...
আয়ত্ত করেছো, শিখেছো যে সব হাওয়া-- সেগুলো
সব ভুল হবে বলেই এতদিন আমি 'রা'-কাড়িনি
প্রবীণ গাছের মতো বয়স্ক হয়ে থেকেছি অন্ধকারে
পরিযায়ী পাখিদের বিশ্রামকালে ওরা যখন আমার
শীর্ণ শাখায় টাঙিয়ে রেখেছিলো হাজার প্রশ্নের ফর্দ--
সেগুলো কখনও শোনার চেষ্টাও করিনি এতকাল
শুধু সামান্য মোচড়ে ওদের বাসা থেকে ডিমগুলো
অহেতুক মাটিতে ফেলে দিয়েছিলাম...
এভাবেই
যাতায়াত করে মৃত্যু ও জীবন, এভাবেই
আচমকা সরু হয়ে যায় নদী, আর অন্যমনস্ক
পারাপারকারী অজান্তে পা রাখে নদীর জীবনে
নির্দ্বিধায় মেজাজ ছুড়ে দেয় পৃথিবীর সমস্ত অসুখের দিকে,
গাড়ি-ঘোড়া ঘরবাড়ি আর নির্বাক ল্যাম্পপোস্টের ওপর
তর্জনীর দৃষ্টি রাখে আয়রন-করা আঁচলের প্রতি
মৃত পশুর মত ঘুমিয়ে পড়ে খোলা রাস্তায়,রাস্তার বাঁকে
আচমকা সরু হয়ে যায় নদী, আর অন্যমনস্ক
পারাপারকারী অজান্তে পা রাখে নদীর জীবনে
নির্দ্বিধায় মেজাজ ছুড়ে দেয় পৃথিবীর সমস্ত অসুখের দিকে,
গাড়ি-ঘোড়া ঘরবাড়ি আর নির্বাক ল্যাম্পপোস্টের ওপর
তর্জনীর দৃষ্টি রাখে আয়রন-করা আঁচলের প্রতি
মৃত পশুর মত ঘুমিয়ে পড়ে খোলা রাস্তায়,রাস্তার বাঁকে
এরপর, যে
যাই বলুক না কেন আমি কান পাতি না...
একদিন দ্যাখা যাবে পৃথিবীর অন্যতম গোলার্ধের
কাছাকাছি সমস্ত আবেগ স্মৃতিময় হয়ে আছে,
কবিতার তরল বিন্দুবৎ বাষ্পীভুত হয়ে মিশে গেছে
বৈশাখ অথবা শ্রাবণের ভেতর, আলতো বাগিচায়
আর একা হয়ে যাওয়া তোমাদের কেউ--
প্রিয়তম দিনটির খোঁজে পাগলের মতো ঘুরে ঘুরে
কাঁদছে অথবা গান গাইছে চিৎকার করে
একদিন দ্যাখা যাবে পৃথিবীর অন্যতম গোলার্ধের
কাছাকাছি সমস্ত আবেগ স্মৃতিময় হয়ে আছে,
কবিতার তরল বিন্দুবৎ বাষ্পীভুত হয়ে মিশে গেছে
বৈশাখ অথবা শ্রাবণের ভেতর, আলতো বাগিচায়
আর একা হয়ে যাওয়া তোমাদের কেউ--
প্রিয়তম দিনটির খোঁজে পাগলের মতো ঘুরে ঘুরে
কাঁদছে অথবা গান গাইছে চিৎকার করে
এইভাবে ক্রমশ
স্মৃতির পাশাপাশি উঠে আসছে দেওয়াল
আর দেওয়াল- ফুঁড়ে উকি দিচ্ছে প্রাচীন আলপনা
আলপনার গভীরে পোস্টকার্ড বদল হচ্ছে সঠিক ঠিকানায়
বাতাসের ল্যাটেরাইট ত্বক ও মজ্জা আক্রান্ত হচ্ছে
ভাইরাসে, ভয়াবহ
তারপর--
আমাদের কথাবার্তা হাওয়ার ভেতর জমাট বেধে যাচ্ছে
মেঘ হয়ে যাচ্ছে যাবতীয় ধোঁয়া...
মৃত্যু হয়ে ঢুকে পড়েছে আমাদের প্রশ্বাসের ভেতর
অথচ, যথার্থ প্রেমিক তার একমাত্র প্রেমিকার জন্য
নিজের পরমায়ুর ভেতর বাঁচিয়ে রেখেছে বিশুদ্ধ অক্সিজেন
আর দেওয়াল- ফুঁড়ে উকি দিচ্ছে প্রাচীন আলপনা
আলপনার গভীরে পোস্টকার্ড বদল হচ্ছে সঠিক ঠিকানায়
বাতাসের ল্যাটেরাইট ত্বক ও মজ্জা আক্রান্ত হচ্ছে
ভাইরাসে, ভয়াবহ
তারপর--
আমাদের কথাবার্তা হাওয়ার ভেতর জমাট বেধে যাচ্ছে
মেঘ হয়ে যাচ্ছে যাবতীয় ধোঁয়া...
মৃত্যু হয়ে ঢুকে পড়েছে আমাদের প্রশ্বাসের ভেতর
অথচ, যথার্থ প্রেমিক তার একমাত্র প্রেমিকার জন্য
নিজের পরমায়ুর ভেতর বাঁচিয়ে রেখেছে বিশুদ্ধ অক্সিজেন
শচীদুলাল
বিশ্বাসের কবিতা
দেওয়াল
দেওয়ালের কোনো পিছুটান নেই।এ রকমটাই মনে হয়েছিলো
দেওয়ালের।কিন্তু দেওয়াল
যখন আছে দেওয়ালের পিছুটানও আছে।মাটি থেকে তার উৎপত্তি সেই মাটিতেই তার
শিকড় পাতা,সেই শিকড় ছেড়ে সে কীভাবে বেরিয়ে আসে।কোথাও না
কোথাও শিকড়
পুঁততেই হয়।শূন্যে ভাসমান অবস্থায় অনেককিছুই থাকতে পারে
দেওয়াল নয়।
মনের দেওয়ালেরও কি সেই একই অবস্থা।তার শিকড়ও কি মনের
গভীরে পোঁতা আছে।নাকি
শূন্যে ভাসমান তার অবস্থান।মনের খোলা মাঠে দেওয়াল দেওয়ার
কি প্রয়োজন?চারপাশে যা চলছে।
সেজন্যই কি মনের চারপাশে দেওয়াল তোলার প্রয়োজন আছে
সবাই বলবে কি সঙ্কীর্ণ আমি একটু হাসবো
সৌম্যেন্দু
হালদারের কবিতা
জয়ী মেয়েটিকে
যখন গুটিয়ে
নেওয়া হবে তখনই বলছে –‘সুতো ছেড়ে দে!’ ছাদের ওপরে উঠেও একদিন যার সঙ্গে পারা যায়
নি, তার লাটাই-এ ছিল বিদেশি মাঞ্জা – তখন হাতে করে ধরে সুতোটিকে কেটে নিয়েছিলাম।
তখন তোমাকে দেখে চিনতেই পারি নি! তোমাকে আমি একদিন ভালোবেসেছিলাম বলে তোমার দিকে
তাকাই নি। আমার চোখ ছিল অন্যদের দিকে। হয়ত তোমাকে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার আগে
দেখেছিলাম! তোমার নগ্ন দেহে হাত রেখেছিলাম। আজ তোমার দেহ বেয়ে কিছুই গড়িয়ে পড়ছে
না। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল আমাকে কেন ট্র্যাকটির পরিসমাপ্তি বানিয়ে নিলে?
সারারাত কেঁদে চুপ করে যাওয়ার পর আমি এখন বুঝতে পারছি না কোনদিকে যাবো! এ যেন
লাটাই-টা থেকে বার করা সেই সুতো! ট্র্যাকটির শেষে বেঁধে রাখা হয়েছে। যে জয়ী হবে সে
আমাকে প্রথমে স্পর্শ করবে।
সব্যসাচী
হাজরার কবিতা
উদ্ধত
দন্ডের মৃত্যু , ব্যাঙের মতো ভঙ্গিমায় বসিয়ে
অল-ইন-অল চিত করে
একটু আগে শরীরের ইকোয় ঊরুদুটোকে
অব্যয়হীন ক্রিয়ার নামতায় কৈশোর
ঝিলমিল ডাক
মিলে গিয়ে কবুতর খোঁজ...
কবুতর
বামা ও মা
কবেকার প্রতিপদ?
উবু অবস্থায়
তুমি তোমার দিকে কাকিল ও কোকিলের টুকুটাকি
ফটাসে প্রহর
হাঁটুদুটোকে কিছুটা উপরে নিয়ে
দাঁতের সারিতে দীর্ঘ জীবনে ফিরে
মহেশ্বর
মহেশ্বরী
এবার লালে
সবুজে নীলে টুং টাং শব্দে ,
রাম ধনুকের
রাতে চিরসখায়
কিনারায়...
কিনারা
ছাগের মতো ,
ওখানে পা গুটিয়ে , তোমার পিঠের উপর রিদিমিক
নোখের আকৃ্তি
নাভিদেশে উল্টে পাল্টে কলাগাছের পৃথিবীতে ভাই-বোন চাষ
ওপরে নীচে
আন্দোলিত করে প্রার্থনায় যেন জন্তুকে বাড়ি ফেরানো
পার্থ ও ভদ্রার
ডিগবাজিতে
প্রেতিনী ভঙ্গিমায় গারল পদ্ধতি ...
গারল
বাহোলোল কেটে
উল বোনায় মাহুত বিতান
খইয়ের শব্দে খইয়ের তানে
আর্কিমিডিসের
স্ক্রু হাতে সূর্য বিকিরণ উনুনের গায়ে
শত্রুর আঙুল গোনায় জয়ের স্বাদ
নখের ক্ষতকে ৮
ভাগে ভাগ করে অবলীলায় ময়ূরের পা অর্ধেক
চাঁদ
ইতিপূর্বে বলার
পর দুদিকের কোমর বগল
দাক্ষিনাত্যের
আঁচড়ের মতো সমুদ্রে টলায় ট্রলারের
ঘর্জু ছুটিয়ে দ্রাবিড় কামিনী
কন্যা সংযুক্ত
মহানদীর গালে
রাক্ষস বিবাহে অলআউট উট
উল্কায় মহানন্দায়
ঘর্জু
রটে যেও না পাখপাখালি
স্বপ্নে উটপাখি
পেলে ণা মেটাও রঙ্গ না রম্ রম্ এখন পেটের নিচে প্রচন্ড গ্রীষ্মে
শীত খোলায়
স্মিথের মোজা-হুল সূর্যের দিকে মেষ চলাচল
তারায় হোক নক্ষত্রে বুজুক
বোনের ছাদে ছল্কায় রবিবার
ছল কায়া মাতাহারি হামদোনায়...
হুল
একশ বা হাজার
বা আরও বড় কেউ কেউ
আরও প্রতি উমা
ছাং আরও রং রঙ্গিনী আরও দ্বিশয্যা ঘর আরও ভস্মের ঢেউ
লঞ্চে বেড়িয়ে নিন
সাদা বাছু্রে
বলাবলের উপায় দেখে
দানবে ভুলিয়ে দাও
তুলে নাও লীলাবতীর পাশে
লীলাবত নায়িকা কতটা ভাবো? কতটা
হেল্প!
দরদী ও পরশী যোগে বিয়োগের টম টম
আরও প্রতি উমা রঙ
আরো তরঙ্গ রম
বেড়িয়ে লঞ্চে নিন...
বাক পড়লে ঋদ্ধ হওয়া যায়। কবিতায় নানা রসের স্বাদ,আর রঙ। গদ্যে কতকিছু জানা ও অজানা নতুন করে পাওয়া যায়। কী যে আনন্দ হয়!
ReplyDeleteপলাশ দে-র কবিতা পড়লুম । বহুকাল পর কবিতায় স্লাই ইনটেলিজেন্সের প্রয়োগ দেখে মনে হল 'আহা, কেন এরকম লেখা আর হয় না' ।
ReplyDeleteAnupam dindin aro bhalo hochchhey potrika... anubadgulo besh bhalo. Abhinandan.
ReplyDelete